সোমবার, ৯ মার্চ, ২০১৫
আসসালামু
আলাইকুম :) আমি শহীদ, প্রভাতের আহ্বানের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই স্বাগতম।
ইনশা আল্লাহ ব্লগিংয়ে আগ্রহী ভাই-বোনদের
জন্য আমরা শুরু করতে যাচ্ছি সম্পূর্ণ নতুন একটি টিউটোরিয়াল সিরিজ। এই
টিউটোরিয়াল সিরিজটি জুড়ে আমরা জানার চেষ্টা করবো গুগল অধিকৃত উন্মুক্ত
ব্লগিং প্লাটফর্ম ‘ব্লগার ডট কম’ সম্পর্কে নানা তথ্য। এক্ষেত্রে আমরা
একেবারে শূণ্য থেকে শুরু করার চেষ্টা করবো, যাতে ইন্টারনেট জগতে একেবারে
নতুন মানুষটিও সহজেই পরিচিত হতে পারে ব্লগিংয়ের সাথে। প্রকৃতপক্ষে আমার এই
সিরিজটি শুরু করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নিজে ব্লগার.কম সম্পর্কে আরো
ভালোভাবে জানা। আর এতে আমাদের পাঠকই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আশা করি সকলের
সর্বাত্মক সহযোগীতা পাবো ইনশা আল্লাহ। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল কাজ
শুরু করি। যেহেতু এটি সিরিজের প্রথম লেখা তাই আজ আমরা কেবল ব্লগার কী এ
সম্পর্কেই জানবো।
বর্তমান
সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় উন্মুক্ত ব্লগ প্লাটফর্মগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো
ব্লগার ডট কম। এটি যেমন ব্যবহার করা সহজ ঠিক তেমনি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্যও।
তাছাড়া এর রয়েছে দারুণ সব কাস্টমাইজেশান ফিচার্স। যার ফলে একজন ব্লগার
মনের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারেন তার ব্লগ সাইটটিকে।
আসসালামু
আলাইকুম :) প্রভাতের আহ্বানের পক্ষ থেকে সবাইকে আবারো স্বাগতম। বরাবরের
মতো সাথে আছি আমি শহীদ। আমরা যারা দীর্ঘ সময় ধরে পিসি ব্যববার করি এবং
বিভিন্ন অপারেশন সম্পন্ন করার জন্য বারবার কী-বোর্ড থেকে মাউস এ যেতে হয়,
তাদেরই কিছুটা সময় ও শ্রম বাঁচানোর একটি দারুন উপায় হলো কী-বোর্ড শর্টকাট
ব্যবহার করা। কিন্তু আমার মতো হয়তো অনেকেই জানেন না Windows এর শর্টকাট
কী-গুলো। যার ফলে কী-বোর্ডের সাথে মাউসের সমন্বয় ঘটাতে ঘটাতেই কেটে যায়
আমাদের অনেকটা সময়। তাই নিজে জানার পাশাপাশি আপনাদেরও জানানোর জন্যি আজকের
এই লেখা। চলুন কথা আর না বাড়িয়ে মূল কাজ শুরু করি।
আবূ
হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, ‘‘বনী ইসরাঈলের মধ্যে তিন ব্যক্তি ছিল।
একজন ধবল-কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত, দ্বিতীয়জন টেকো এবং তৃতীয়জন অন্ধ ছিল। আল্লাহ
তা‘আলা তাদেরকে পরীক্ষা করার ইচ্ছা করলেন। ফলে তিনি তাদের কাছে একজন
ফিরিশতা পাঠালেন। ফিরিশতা (প্রথমে) ধবল-কুষ্ঠ রোগীর কাছে এসে বললেন,
‘তোমার নিকট প্রিয়মত বস্তু কী?’ সে বলল, ‘সুন্দর রং ও সুন্দর ত্বক। আর আমার
নিকট থেকে এই রোগ দূরীভূত হোক - যার জন্য মানুষ আমাকে ঘৃণা করছে।’ অতঃপর
তিনি তার দেহে হাত ফিরালেন, যার ফলে (আল্লাহর আদেশে) তার ঘৃণিত রোগ দূর হয়ে
গেল এবং তাকে সুন্দর রং দেওয়া হল। অতঃপর তিনি বললেন, ‘তোমার নিকট প্রিয়তম
ধন কী?’ সে বলল, ‘উট অথবা গাভী।’ (এটি বর্ণনাকারীর সন্দেহ।) সুতরাং তাকে দশ
মাসের গাভিন একটি উটনী দেওয়া হল। তারপর তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তোমাকে এতে
বরকত (প্রাচুর্য) দান করুন।’
অতঃপর
তিনি টেকোর কাছে এসে বললেন, ‘তোমার নিকট প্রিয়তম জিনিস কী?’ সে বলল,
‘সুন্দর কেশ এবং এই রোগ দূরীভূত হওয়া - যার জন্য মানুষ আমাকে ঘৃণা করছে।’
অতঃপর তিনি তার মাথায় হাত ফিরালেন, যার ফলে তার (সেই রোগ) দূর হয়ে গেল এবং
তাকে সুন্দর কেশ দান করা হল। (অতঃপর) তিনি বললেন, ‘তোমার নিকট সবচেয়ে
পছন্দনীয় ধন কোনটা?’ সে বলল, ‘গাভী।’ সুতরাং তাকে একটি গাভিন গাই দেওয়া হল
এবং তিনি বললেন, ‘আল্লাহ এতে তোমার জন্য বরকত দান করুন।’
অতঃপর
তিনি অন্ধের কাছে এলেন এবং বললেন, ‘তোমার নিকটে প্রিয়তম বস্তু কী?’ সে
বলল, ‘এই যে, আল্লাহ তা‘আলা যেন আমার দৃষ্টি ফিরিয়ে দেন যার দ্বারা আমি
লোকেদেরকে দেখতে পাই।’ সুতরাং তিনি তার চোখে হাত ফিরালেন। ফলে আল্লাহ তাকে
তার দৃষ্টি ফিরিয়ে দিলেন। ফিরিশতা বললেন, ‘তুমি কোন্ ধন সবচেয়ে পছন্দ কর?’
সে বলল, ‘ছাগল।’ সুতরাং তাকে একটি গাভিন ছাগল দেওয়া হল।
অতঃপর
ঐ দুজনের (কুষ্ঠরোগী ও টেকোর) পশু (উটনী ও গাভীর) পাল বৃদ্ধি পেতে লাগল
এবং এই অন্ধের ছাগলটিও বাচ্চা প্রসব করল। ফলে এর এক উপত্যকা ভরতি উট, এর এক
উপত্যকা ভরতি গরু এবং এর এক উপত্যকা ভরতি ছাগল হয়ে গেল।
পুনরায়
ফিরিশতা (পরীক্ষার উদ্দেশ্যে তাঁর পূর্বের চেহারা ও আকৃতিতে) কুষ্ঠরোগীর
কাছে এলেন এবং বললেন, ‘আমি মিসকীন মানুষ, সফরে আমার সকল পাথেয় শেষ হয়ে
গেছে। ফলে সবদেশে পৌঁছনোর জন্য আল্লাহ অতঃপর তোমার সাহায্য ছাড়া আজ আমার
কোন উপায় নেই। সেজন্য আমি ঐ সত্তার নামে তোমার কাছে একটি উট চাচ্ছি, যিনি
তোমাকে সুন্দর রং ও সুন্দর ত্বক দান করেছেন; যার দ্বারা আমি আমার এই সফরের
গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাই।’ সে উত্তর দিল যে, ‘(আমার দায়িত্বে আগে থেকেই) বহু
অধিকার ও দাবি রয়েছে।’
যখন আমরা বিশ্বস্ত বন্ধুর কথা ভাবি, তখন
আমরা কেবল সর্বকালের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু আবু বকর আস-সিদ্দীক্ব
(রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর কথাই ভাবতে পারি। তাঁর ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেন, “আমি যার কাছেই ইসলাম পেশ করেছি, সে-ই ইসলাম গ্রহণের পূর্বে নিজে নিজে বিবেচনা করেছে, একটু
চিন্তিত হয়েছে কিংবা আমার নবুওয়াতের প্রমাণ চেয়েছে। কিন্তু আবু বকরকে
ইসলাম পেশ করার সঙ্গে সঙ্গে নিঃসংকোচে সে ইসলাম গ্রহণ করেছে।” সুবহান আল্লাহ! কী অপূর্ব তাদের বন্ধুত্বের ভীত। নবী (ﷺ) তাঁকে এতোটাই বিশ্বাস করতেন যে, তিনি তাঁকে ‘আস-সিদ্দিক্ব’ উপাধি দিয়েছিলেন, কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিলো দৃঢ় ও অটল, আর তাঁর বন্ধুত্ব ছিলো পাথরের মতো কঠিন যার কারণে তিনি অনেকবারই নবীজির (ﷺ) বাণীকে সমর্থন করতে গিয়ে বিসর্জন দিয়েছেন নিজের সম্পদ ও নিরাপত্তা।
যে সকল বন্ধু আপনাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসে
ভালো বন্ধুর একটি মৌলিক উপাদান হলো একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসা। একটি চমৎকার হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি যে, যারা পরস্পরকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসে কিয়ামতের দিন তারা আল্লাহর আরশের ছায়ায় থাকবে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, সাত প্রকার লোককে আল্লাহ তা’আলা হাশরের ময়দানে নিজের আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন। যখন সে ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না। তাদের মধ্যে রয়েছেন সেই দুই
ব্যক্তি যারা আল্লাহর জন্য একে অপরকে ভালোবাসেন এবং সেই মহব্বতের জন্যই
তারা একত্রিত হন। এবং সেই মহব্বতের কথা স্মরণ রেখেই পরস্পর থেকে পৃথক হন, [বুখারী], যা আমাদের দেখায় জীবন চলার পথে ভালো সাহচর্যের মাধ্যমে কতো সুউচ্চ মর্যাদায় আমরা উন্নিত হতে পারি।
কিছুদিন
আগেই সেমিস্টার শেষ হওয়ায় ছুটি কাটাতে বাড়ি গিয়েছিলাম। সেখানেই বন্ধু
শাওনের সাথে আড্ডা ও ঘোরাঘুরি করতে করতে একদিন কিনে ফেললাম নসীম হিজাযীর
নতুন (আমার কাছে) একটি বই। নাম অপরাজিত। মূল নাম পরদেশি দিরখাত (পরদেশি
গাছ)। চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই বইটি সম্পর্কে কিছু তথ্য।
বইয়ের নামঃ অপরাজিত
লেখকঃ নসীম হিজাযী
অনুবাদকঃ আবদুল মান্নান তালিব
সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ উর্দু সাহিত্যের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক নসীম হিজাযী রচিত ‘অপরাজিত’ উপন্যাসটি
মূলত এক তরুণ ঔপন্যাসিকের জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন চরাই-উতরাইকে কেন্দ্র
করে লেখা। আর এর সময়কাল ছিলো ঊনিশশো চল্লিশের দশক যখন উপমহাদেশে চলছিলো
পাকিস্তানের আজাদী আন্দোলন। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইউসুফ বাবা-মায়ের
বড় সন্তান। বাবা-মায়ের প্রিয় সন্তান হওয়ার জন্য আদব, সততা, সাহসীকতা, বুদ্ধিমত্তা, ঈমানদারীতা
ইত্যাদি যতগুলো গুণের প্রয়োজন তার প্রায় সবগুলোই ছিলো ইউসুফের মধ্যে। সে
ছিলো লাহোর ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র। মামাতো ভাইয়ের বন্ধুর সাথে কোয়েটায়
ভ্রমণে গিয়ে মুহাম্মদ সিদ্দীক নামে এক আর্মি অফিসারের জীবন বাঁচানোর
মাধ্যমে ইউসুফের গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার পরিবারের সাথে। আর সেখান থেকেই
ঘটনার শুরু। সিদ্দীক সাহবের অনুরোধে সে তার বাড়িতে বেড়াতে যায় এবং ঐ
পরিবারের ছোট্ট মেয়ে নাসরীন ও তার নানীর সাথে ইউসুফের গড়ে ওঠে ভীষণ ভাব। আর
সেখানেই সে তার প্রথম উপন্যাস লেখা শুরু করে। বাড়ি ফেরার পর গ্রামে তার
বাবার এক ধনী বন্ধুর বাড়ি ডাকাতের হাত থেকে রক্ষার পর পুলিশের সাথেও তার
ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং পুলিশের চাকরীতে তার তরক্কীর পথ উন্মুক্ত হয়ে
যায়। যদিও তার বাবা এতে অনেক খুশি হয়েছিলেন এবং চাইছিলেন ইউসুফ এই ধরনেরই
কিছু করার মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলুক, কিন্তু
তার ইচ্ছা ছিলো ভিন্ন। তার দৃঢ় স্বপ্ন ছিলো একদিন সে বড় ঔপন্যাসিক হবে এবং
তার মাধ্যমেই সে তার রুটি-রুজির ব্যবস্থা করবে। আর এ ব্যাপারে তার মায়ের
ছিলো পূর্ণ সমর্থন। এক সময় ইউসুফের বাবা লাহোরে বদলি হয়ে গেলে তারা
সপরিবারে সেখানে চলে আসে। লাহোরে পৌঁছে সে পাকিস্তানের আজাদী আন্দোলনের
সমর্থনে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করে। ফলে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে
তার সুখ্যাতি। ঘটনাক্রমে আবার কোয়েটায় দেখা হওয়া সেই পরিবারের সাথে দেখা হয়
ইউসুফের পুরো পরিবারের, যেখানে উপস্থিত ছিলো ইউসুফের মায়ের সপ্নের শাহজাদী, নাসরীনের
বড় বোন ফাহমিদা। তারপর ধীরে ধীরে দু পরিবারের সম্পর্ক হতে থাকে ঘনিষ্ট
থেকে ঘনিষ্টতর। কিন্তু হঠাৎ ইউসুফের জীবনে নেমে আসে দুঃখের কালো ছায়া।
কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় দুনিয়ায় তার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিত্ব তার মা।
ফলে সে হয়ে পড়ে নিঃসঙ্গ। আর এই নিঃসঙ্গতায় তার পাশে এসে দাঁড়ায় ফাহমিদা ও
তার পরিবার যা তাকে তার উপন্যাস সম্পন্ন করতে অনুপ্রেরণা যোগায়। উপন্যাসের
শেষ পর্যায়ে লেখা কিছু কথা থেকে এটা সহজেই অনুমান করা যায় যে উপন্যাসের মূল
চরিত্র ইউসুফের মাধ্যমে লেখক মূলত নিজেরই অসমাপ্ত আত্মজীবনী ফুটিয়ে
তুলেছেন, যা থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করতে পারে যে কোনো তরুণ লেখক।
ঘটনাটি
আব্বাসীয় খিলাফার স্বর্ণযুগের সময়কার। মুসলিম সালতানাতের রাজধানী বাগদাদে
বাস করতেন এক জ্ঞানী ব্যক্তি যিনি তাঁর অসাধারণ জ্ঞানের জন্য সুপরিচিত
ছিলেন।
একদিন তাঁর পরিচিত এক লোক তাঁর সাথে দেখা করতে এসে বলতে লাগলো, “জানেন, এইমাত্র আপনার বন্ধু সম্পর্কে আমি কী শুনেছি?”
জ্ঞানী লোকটি বললেন, “দাঁড়াও। কোনো কিছু বলার আগে আমি চাই তুমি একটি ছোট্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হও। পরীক্ষাটির নাম তিনস্তরের ছাঁকনী পরীক্ষা।”
“তিনস্তরের ছাঁকনী?”
“ঠিক তাই,” জ্ঞানী লোকটি বলতে লাগলেন, “আমার বন্ধু সম্পর্কে কোনো কিছু বলার আগে তুমি যা বলতে চাও তা একটু পরীক্ষা করে নিলে খুব ভালো হবে।
সে কারণেই আমি একে তিনস্তরের ছাঁকনী পরীক্ষা বলে ডাকি।
প্রথম স্তর হচ্ছে সত্য। তুমি কী এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে যা বলতে চাইছো তা পুরোপুরি সত্য?”
“নাহ্,” লোকটি বললো, “আসলে আমি বিষয়টি সম্পর্কে এইমাত্র জেনেছি এবং...”